DESTINY IS NEVERLAND AND NEVERLAND IS DESTINY. 
PEN- PROLAY. 
INK-ANANYA. 







                                                                               নারী





হে মোর দেবতা ,
কতো যে  শাস্ত্রকারের মুখে তো   শুনেছি ,
তোমারই  কতোই  না   সে অজস্র সে গুনগাথা ,
শুনেছি, ভেবেছি, হয়তো বা বিশ্বাসও করেছি ,
আমার   অচেতন বা সচেতনে ডেকেছি তোমায় ,
যদি তাতে জুড়ায় কিছু গ্লানি -  অন্তরের কিছু  ব্যাথা ।

তুমি তো নাকি  আছো সবখানে -
পাষাণের ভিতরে লুকিয়ে থাকা জলে ,
অথবা বিষাক্ত বিধ্বস্ত  নগরের কলে  ,
আছো তুমি ছোটলোকের মতো  বেড়ে ওঠা বড়োলোকের সোনার থালায় ,
আবার  আছো নাকি গরীবের বিষাক্ত পান্তাভাতের জলে ।


আজ এসেছি তাই আজ স্বত্বাকে  সঁপে দিতে ,
চিরকালের দীনতা , হীনতা আর গ্লানি- ভুলে মুক্তির স্বাদ নিতে  ।
 দীন হীন  এই জীবনের -যা কিছু হয়ে গেছে  জলাঞ্জলি ,
আজ সব যাক চরনে তোমার -  হবে সে  অঞ্জলি ।


তোমার চোখে অন্তর  রাখি ,
মুখেতে চিরন্তন সেই  অনাবিল স্বর্গীয় হাসি ,
কিন্তু তোমার অবয়বে  যে দেখি  বাসনার চাহনি ,
তাই কি এত আয়োজন -  প্রয়োজন কুমারী দেবদাসী ?

যুগ যুগান্তরে তুমি নাকি করেছো  মুক্ত ?
 কিন্তু সে কবে  ?  কাকে ? কোথায় ? কখন ?
আমি তো দেখছি স্বরুপ  তোমার ,
চিরলালের  অন্তরাত্মা  তোমার - যে  নিজেই  অতৃপ্ত ।

 তোমার নৈবেদ্য  তো  চাই ,
 অনাঘ্রাতা কুমারী অথবা  ঋতুহীনা দেবদাসী ,
তাই কি যুগ যুগান্তরে  শাস্ত্রের  হাত ধরে ,
মানুষের সাথেই এত  দর কষাকষি ?

নারীকেই  হতে হবে - পবিত্র , মুক্ত আর কামনাশূন্য ,
যাতে স্বর্গীয় কামনায় -তাকে করে তোলা  যায় দেবভোগ্য পণ্য ।

পেটের দায়েই  তো আমি হয়েছিলাম বেশ্যা ,
 সেদিন আমার শরীরটা  হয়েছিলো সার্বজনীন দাতা ,
কিন্তু তোমার বাণীকে  ভুল বুঝে আজ ,
হলাম  সম্মানহীনা  দেবদাসী  আর তুমি হলে ত্রাতা  ?

সমাজে গেলে  হই বেশ্যা - আর তোমার কাছে  এলেই  দেবদাসী ?
এই যদি হয় তোমার মুক্তি -চাইতে পারতে তোমার পাথেয় ,
তাতে  তো লাগতো না  ভক্তি -
 আর  অনাদিকালের  ভিখারীর !
তার কিসে   লাগে  কোন যুক্তি ?

অমরাত্মা নই , বেশ্যাও নই -   নই আমি  পুণ্যবতী ,
তোমার কাছে আমি নরম মাংশের দলা ,
কোনকালেই যে  তো  তোমার কামনা মেটেনি ,
তাই মুক্তির  নামেই চলেছে  ছেলেখেলা  ।

জানি যেখানে প্রশ্নেরই  নেই  কোন অধিকার ,
সেখানে অবাঞ্ছিত থেকে  যায় ন্যায্য বিচার ্‌..................
তবুও জানতে সাধ করে ্‌,
মুক্তির নামে দেবদাসী করে   - রাখছো কাকে   নিজের ঘরে ?
আমি তো জানি ভীত তুমি  ,  চরম সন্ত্রস্ত তুমি ,
ভয় তো তোমার সামান্য  ঋতুবতী নারীতে ,
তাই কি  প্রবেশ নিষেধ সকলের ,- তোমার মিথ্যার কারবারে  ?

 কিন্তু ঋতুবতী  নারী ?
 সেই তো জীবনের  স্পন্দন ......
তাকে কেনো  ভয় পাও ? কেন কেঁপে ওঠে মন ?
তাহলে কি নেই তুমি সৃষ্টি বা জীবনে ?
তাই বুঝি মৃত্যু , মুক্তি আর স্বর্গের ছক কষা মনে মনে ?

তোমার যে অসীম  ক্ষমতার বড়াই,
সে যে অতি সামান্য , অতি নগন্য ...
তুমি কে ? কেন  দেবে নারীকে মুক্তি ?
মূর্খ দেবতা তুমি -  শুনে রাখো কান খুলে ,
এই যে তোমায় ডেকেছি - যাকে তুমি  ভাবো ভক্তি......
ওটা তোমার প্রতি আমার উপহাস  ,
আর আমার স্বত্বার গভীরতম  শক্তি ।

                                                             ইতি
                                                   এক  সাধারন  নারী


এবার পড়ুন -      
শয়তান