অস্ত্বিত্বে অনন্যা

DESTINY IS NEVERLAND OR NEVERLAND IS DESTINY. 
PEN- PROLAY. 
INK- ANANYA. 

  S.V.O            


অস্ত্বিত্বে অনন্যা



       

১)
আমাদের চলে যাওয়া দিন অথবা কতো সে  অজানা রাত,
আমাদের কতোই  সে না বলা মনের গোপন কথা,
অথবা  কুমারী সেই নদীর  বুকে ভেসে ওঠা নিদারুন   ব্যাথা,
নিজেদের খুঁজে পাওয়ার আনন্দ বা বিয়োগের খেলা -
সেই সব সময় -   কি কোনদিনও    মিথ্যা হবে  ?
নাকি পাথরের বুকে জন্মানো - শ্যাওলারও  রুপে তারা রবে ?
যে নিয়মে দিনের নিভে যাওয়া আলোতে শুরু হয় লজ্জিতা  কুমারী চাঁদের গান,
অমোঘতার সেই গানেই -   বাজতেই পারে  আমাদেরই  সুর অথবা  সেই আমাদেরই প্রান ।
প্রানহীন শরীর যদিও বা  হয়ে যায় পচন ধরা মাংসের দলা,
তবুও তো মিথ্যা নয় - অতি  যত্নে  বা   অতি সংগোপনেও নিয়ত নিয়তির  কথা বলা।
দুপুরের রোদ মেখে - শরীর ভেজানো ঘাম নিয়ে,
জনজীবনের কোলাহল সরিয়ে   - পাশবিকতার সংগ এড়িয়ে,
কতো সে ছোট ছোট গলি - ঘিরে থাকা কতো সে অজানা গাছের সারি !
ওদেরই তো  সংগী করে আমরাই তো  হেটেছি,
জগতের চিরন্তন  চিন্তাবিহীন পুরুষ আর নারী
রোদের চড়া তেজ কিছুতেই  পড়বে না -
আমাদের মুখ যাবে মরে ,  কিন্তু বুক যাবে না পুড়ে,
আমাদের বলা কথা - না হয়  কোনদিন না হোক গল্পগাথা,
তবুও সে রয়ে যাবে কোনও এক কুমারী  নদীর তীরে।
আমাদের চলার পথে থাকুক ভিজে মাটি,
গোড়ালি তে লেগে থাকুক গাছের ঝরে যাওয়া পাতার -
মড়ে যাওয়া গন্ধ। 
আমাদের ছাতাহীন মাথা - দিকভ্রান্ত দৃস্টি,
নতুন চোখে, নতুন করে খোঁজা -নতুন কোন সৃস্টি।
কতোটুকুই বা আমাদের চাওয়া আর তার থেকে কতো কমই
না  আমাদের  পাওয়া ?
তারও  না আছে কিছু ভালো, আবার নাই আছে বা  কিছু মন্দ,
তবুও রাত শেষেও  দিন আসে - থেকে যায় দ্বন্ধ।

নগরের নাগরিকতার বোধ হারিয়ে যায়,
তার সদা জাগ্রত দৃস্টি চলে আসে,
জীবনের,  মননের আর মরনের আণুবীক্ষণিক কোনে, 
আর আমরা ?   
 চলেছি জৈবিক ইন্দ্রীয়ের টানে।
অজগ্রামের ফসলের  মাঠের আল ধরে,
অথবা নীরবতা  মাখা গঞ্জের পথ ধরে,
আমরা করেছি গান,  দেখেছি স্বপ্ন আর বলেছি কতো শত
হারিয়ে যাওয়া গল্প,
আমাদের স্বপ্ন,  আমাদের আশা,  নিয়মেই  সকলি  নিয়মিত ছিলো অল্প।
জমির সীমানার মালিকানা লেখা আলপথ,
অথবা রোদ মেখে বয়ে যাওয়া কোন বটের হাওয়া,
সবই থেকে যায় তেমনি।
অবয়ব বদলায় - কিন্তু বদলায় কি প্রানের কথা কওয়া ?
শরীরের স্পর্শ,  মননের গান অথবা স্বপ্নের টান....
আমাদের  চেতনায় থেকে যায় আমাদেরই  ঘ্রাণ।
প্রানের গভীরে বয়ে চলা সুর -গেছে কি সব থেমে?
মনের গভীরে  জমানো কথা - সবকিছু কি গেছে  কমে?
ফসলহীন মাঠের কোণে কোণে কি আসেনা আর
নতুন শৈশব মাখা সবুজের কিছু  চারা ?
কেবল আমরা ছাড়া আর কি কারোও  নেই !  
 কোনোও দিন শেষে নিজের কাছে নিজের ফেরার তাড়া? 
কোনও ভয় আর মনে আসেনা,
আসেনা আর কিছু পাওয়া বা হারানোর চিন্তা,
মায়াবী ফসলের আলপথ ধরে,
অথবা  ছায়াঘেরা গলিতে,  হেটেছি হাতে রেখে হাত,
জীবন,  মরন বা বিচ্ছেদ - সবকিছুই মিলেমিশে -
সাগরের সংখ্যা তো  সেই সাত।

সেই কোনও একদিনে , হয়তো বা আমায় হতে হলো  শেষ
কালের নিয়মে,
 আর তোমার মাংসের ভাগ পড়েছিলো লুটেরার দলে,
কিন্তু তারপরও কি আর  হাসিনি ?  তবুও  হারিয়ে কি  যাইনি আমরা  আর -----
একসাথে অজানা অচেনা ফুলেদের দলে  ?
তারপরেও কি আর কখনো একসাথে আর কিছু ভাবিনি ?   ? 
চেনা মুখ অচেনার  আড়ালে -  মন ভরে আর কি দেখিনি  ? 

তারপর হয়তো বা কোন এক মহামারীতে তুমিও চলে গেছিলে! 
 বিষাদেও আমিও কি দিইনি অগ্নি স্পর্শ তোমায় সেদিন?
 শোকাতুরা কুমারী নদীর কূলে !
 তবুও কি ভুলে গেছি সব?
মাঠ,  ঘাট, খাল আর  জমির আল বেয়ে,
ছুটে কি বেড়াইনি আর একসাথে  ?
চাঁদের  আলোয় স্বপ্নের পথ বেয়ে ,    ,
কিছুকাল থাকতে হবে এবার  নিজের নিজেকে ভুলে -
ছুটে চলার অনন্ত পথ - আমাদের ঘিরে আছে সীমাহীনতার রেখা, 
বৃষ্টির ফোটা হয়ে পড়তে হবে রাত শেষের ভোরে -

সবুজ ঘাসের উপর শিশিরের সাতরঙা রংধনুতে,

হতেও  পারে আমাদের আবার  দেখা।
কোন এক প্রলয়ংকর ঝড় নিশ্চয়ই আসবে,
যুবতী নদীর বুকে নেমে আসবেই  এক বন্যা -
সৃস্টির অজানা পথেই হয়তো আবারো আসবে  -
সেই  সে  নারী  এক অনন্যা ।
এই সময় হতে বহুকাল  পরেও,
হতে পারে আমাদের চেনা প্রান্তর থেকে অন্য এক প্রান্তরে,
সীমানা থেকে বহুদূরে,
আবারো কোন যুবক আর যুবতী,
তারা তো হাটবেই নিজদের পথে, নিজেদের হাত ধরে।
মেঠোপথ অথবা কাদা মাখা গলি -
লুকিয়ে থাকা কোন গঞ্জের রাস্তা,
হয়তো বা উঠবে ভরে প্রেমিক আর প্রেমিকাতে,
হয়তো বা দেখা হবে আবার  কোন জটিল  চাহনির খেলায়, 
হতেও পারে - মিলিয়েও  যাবে  আবার বিচ্ছেদের মেলায় -
তবু জেনে সুখী থেকো - এই নয় শেষ,
আমাদের সকল না বলা কথাগুলো -অন্যেরা বলবে, 
মুছে তো যাবেনা কখনোই  - এই আমাদের  অস্তিত্বের রেশ।


২। 

খনিজের মতো,
মননের অন্তস্থলে চাপা পড়ে আছো ভালোবাসা হয়ে।
জলের মতো
মননের তাপ কে সিক্ত করেছো ভালোবাসা হয়ে।
বাতাসের মতো,
মননকে ভেঙে চুরমার করেছো ভালোবাসা হয়ে।
ক্লান্ত বটের মতো,
আমায় স্নেহ দিয়েছো ভালোবাসা হয়ে।
জীর্ণ কুটীরের মতো,
আমায় শোকাঘাত থেকে আড়াল করেছো ভালোবাসা হয়ে।
নক্সী কাঁথার মতো,
দূরে সরিয়ে দিয়েছো মরনের হিমেল স্পর্শ, ভালোবাসা হয়ে ।

আর আমি ?
তোমাকে অনুভব করতে চেয়েছি কেবল আমার
অনুভূতিহীন অনুভবে।

৩)

আমাদের আজ আর দেখা হয়না কোথাও,
হতেই পারে, কিছুটা দূরত্ব গেছে বেড়ে -
   কিন্তু " আপনি কেমন আছেন ? "
   সেকথা  তো আজও কানে বাজে,
   ভরা শ্রাবনের সিক্ত ধারার সুরে।

ভালোবেসে আমরা জলে ভেসেছি,
হয়তো রিক্ত হয়েছি -  বা শূন্যতা মেখেছি,
তবুও তো আশা ভরা স্বপ্নের ঘোরে,
নিজেদের চোখে নিজেদের দেখেছি। 

 এখনো কিন্তু সেই কাছেই আসো,
 সজোরে নিজেরই  বুকে টেনে নাও,
 আমার চেতনাকে ............
আটকাও নিজ বাহুডোরে,
আমাদের ক্লান্ত মনন গান গেয়ে ওঠে,
আমাদের ম্রিয়মাণ  গল্পের সুরে। 

রাতের অন্ধকার মাখে দিনের নরম আলো,
সেই আলোতেই দেখি আমি,
শূন্য ঘরে শুধু স্মৃতিটুকুই  পড়ে আছে,
শুধু স্বপ্নেই  এসেছিলে তুমি।


৪)

ছোট ছোট মানুষের ছোট ছোট পথ চলা ,
চলতে চলতে হয়তো বা কিছু বলা,
বলতে বলতে কথা যায়  ফুরিয়ে
দিনান্তে  অজান্তে   অজানাতে হারিয়ে।
চেনা কোন পথ মাঝে - অজানারই সুর,
সেই সুরেই পথে নামা - দূর থেকে দূর।
জানতাম ঠিকানাটা হয়তো দীগন্তে,
তবু কোন শূন্যতা পারিনি বা মানতে।
জানতাম আছো তুমি- নিরুত্তর মানবী,
পথ মাঝে আমি ভাবি সকলি তোমার ছবি।
দিনান্তে নেমে আসে মায়াবিনী ছন্দ,
আমাকে ভুলিয়ে দেয় ভালো কিবা মন্দ,
অন্ধকারের সেই সরনী ধরে,
নিয়তিরে নিয়ে আমি তোমারি দ্বারে।
দ্বার বলে কাছে এসো -লও আপন করে,
রিক্ততা মেখে আমি তোমারই ত্বরে,
অশান্ত শ্রাবনের সুরে দিয়েছিলে কথা,
শারদ সকালে দেখি আছে শুধু ব্যাথা।


৫) আসলে তোমার মাঝেই খুঁজে পাই ,
শিশুকালের হারানো একটা আশ্রয় ,
তাই যেভাবেই  যতটুকুই পাই ,
পুরোটাই করি সাশ্রয় ।

কখনও বা পাই শৈশবের সেই,
হারিয়ে যাওয়া ব্যাথাহীন রুপকথা ,
সেটার পরেই  বুনে চলি -হাজার এক নকশী কাঁথা ।

কখনও বা দিয়েছো কৈশরের অনুপ্রেরণা ,
একধাপে যৌবনে এসে দেখি ,
তুমি আমার অন্তরেরই  আন্তরিক কামনা ।

অজান্তে এগিয়ে চলি আমি,
যখন আর থাকেনা ভয় , থাকেনা লজ্জা,
দেখি সেই  তুমিই  এখনো আছো ,
যেন ব্যাধিরও  ফুলশয্যা 

মৃত্যুর হিমশীতল স্পর্শেও দেখি ,
যেন তুমি চিরন্তন সে স্বত্ত্বা ,
দেবত্বেরই স্পর্শ পাওয়া ,
মুক্তিপ্রাপ্ত আত্মা।

তারপরই যে  নিজেকে আবিস্কার করি,
আমাদের জন্ম জন্মান্তের গতিতে,
যেখানে সবকিছু  মিশেছে- আমি বা তুমিতে।

৬)
আজকের ঠিক এই অন্ধ স্তব্ধ  সময়কাল হতে ,
দূর থেকে দূরান্তে   - সে   পিয়াসী সুদূর  ,
অথচ এতোটাও তো দূর নয় ,
যাকে একেবারে  বলা যায় যে প্রান্ত কিছুর -----
এমনই  কোন এক নিভৃত নিশ্চিন্ত  রাতে ,
চরাচর  যখন নিশ্চিন্তে নিদ্রাচ্ছন্য ,
আকাশের নরম গোলাকার চাঁদের মুখ থেকে ঝরে পড়া আলোর কণাগুলোকে গায়ে মেখে ,
আমরা পৌঁছে গেছিলাম ,
কোন এক নির্জন নিশ্চিন্ত কুটীর দ্বারে ।

 ছবি নয় ,  নৈকট্য নয় -  কোন মানবিক কিছুও  নয় ,
চেনা ছাঁদের  অবয়ব নয়- অপরিচিত  তো নয় ,
পঞ্চ ইন্দ্রীয়ের নাগালে যা যা আসে ,
শব্দ ছাড়া সকল ছিলো বেকার।
"কি করছেন ? "- ঠোঁট ছুঁয়ে আসা মাত্র দুটি শব্দ,
কানের দরজা থেকে মনের  গহনতম কোনে গেছিলো,
সেদিন আলোর চেয়েও দ্রুত বেগে ,
হয়তো বা পুরোটাই - ক্ষণিকের  আবেগে ।
তবুও  তো আমরা কিছু বলেছিলাম -আর আমরা কিছু শুনেওছিলাম ,
হয়তো তেমনি কিছু ,
যা আমরা চেয়েছিলাম হয়তো বলতে বা শুনতে ,
নিজেদের অচেতন অন্তরে ,
কিন্তু জোটেনি স্থান , জোটেনি কাল,
এমনকি জোটেনি কোন মেঠো পথ,
ধু ধু করা দীগন্তেরও কোনো  প্রান্তরে ।
শব্দকে মনের  ছাঁচে ফেলে --
যত ছিলো আমাদের সকল  আদান প্রদান,
সে সকল কথাতে তো , আজও জোটেনি  কোন সুর,
তারা তো হতে পারেনি ,  আজও কারো  কোনও গান। 
তবুও আমরা তো বলেছিলাম , শুনেছিলাম অল্প করে ,
ঠিক যেন স্বপ্নের মতো ,
যেভাবে সৈকতে শিল্পীরা ,   বালির প্রাসাদ গড়ে ।

আজ আবার এই শ্রান্ত ক্লান্ত নিশীথে ,
অনু পরমানুর মতো টুকরো হয়ে যাওয়া -সেই শব্দের কণারা জুড়ে যায়, 
বুকের ভিতর শুরু হয় ফেলে আসা অণূরণন।
কানে কানে কারা যেন বলে ,
সেই সব শেষ না হয়ে যাওয়া  গল্প ,
হয়তো বা সময়ের  বিচারে যাদের আয়ু ছিলো অল্প।
আজও রাতের আকাশে চাঁদ আসে ---
নদীর মড়ে যাওয়া ঘাট , ছোট কোনো গলি পথ , সীমাহীন প্রান্তর ---
সব কিছুকে ছুঁয়ে দিয়ে পূর্ণিমার নরম আলো আমার কানে চুমু খেয়ে বলে,
" "তোমাদের বলা বা  না বলা  কথা গুলো শুনেছি আমরাও ,
কিন্তু রেখেছি তাদের গোপন,
চাইলেই ফেরত নিও -যদি চায় মন"।

আমার সকল অস্তিত্ব কেঁপে ওঠে ,
নিষ্ঠুর , নির্মম , একাকীত্বের হাহাকারে  ,
মনে হয় ছুটে যাই , পালিয়ে যাই , ভেসে যাই ,
আমার ভিতর লুকিয়ে থাকা -তোমার অস্তিত্বকে সঙ্গী করে ।
অসীম ,অবাধ, আর  অচেতন কোন পারাবারে ............
অনু পরমানুর চাইতেও ছোট- টুকরো টুকরো  ,
চাঁদের আলোর কণারা বোলে ওঠে , 
"আমরা আছি - এসেছি তার গোলাপি ঠোঁট স্পর্শ করে, 
এসেছি তার তৃষ্ণার্ত জিহ্বার সকল তৃষ্ণা নিয়ে- আমাদের সারা গায়ে লেগে আছে তোমাদের  সেইসব  অতীতের বন্যা, 
তোমাকে তোমার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে,
আলো, জল আর বাতাসকে সংগী করে ,
যেতে হবে দূর কোন প্রান্তরে ,
যেখানে প্রতি কোনে আছে সেই অনন্যা।
ওরা বলে আর আমি শুনি ---
এমনটাও নয় , যে শুধুই শুনি ,
শুনি আর মনে মনে দিন গুনি ,
এমন একটা ঝড়ের দিন আমার চাইই্‌.....................।
যদি সেই মেঠো পথ ধরে আমি আরো একবারও যাই ।
"তুমি যে আছো "- সেকথা তো আমি জানি ,
শুধুই যে  জানি তাও  নয় , 
আমার অচেতন থেকে সচেতন ......
সবেতেই  তো আমি ,  তা মানি।
তাই আবারো একটা দিন চাই -
হোক না  সে বৈশাখের পুড়িয়ে দেওয়া কোনো  দুপুর ,
অথবা শরতের ছন্দে বেজে ওঠা নূপুর।
শ্রান্ত, ক্লান্ত , রক্তাক্ত পায়েও যদি ,
যেতে পারি আমি সে সীমাহীন প্রান্তরে ,
যেখানে গোধুলির  নামে সূর্য নেমে আসে ...
আকাশ ছুঁয়ে থাকা সবুজের  হাত ধরে,
যেখানে ভুলেও জ্বলেনা কখনো সন্ধ্যাপ্রদীপ,
যেখানে নেই আর কোন নাম ...............
সন্ধ্যায় নদীর কালো জল ছুঁয়ে দিয়ে যায় তোমার পায়ের নরম  আঙ্গুল,
যেখানে গোলাপ বা পলাশের চেয়েও আরো বেশী সুন্দর,
অসীম দূরন্ত হাওয়ায় তোমার উড়তে  থাকা চুল ,
যেখানে বাতাস তোমায় জানিয়ে দেবে ,
কাঙ্খিত দূরন্ত সে  আগমনের কথা ,
নিশ্চিত আমি - আরো এক বা দুই বার নয় , বরং বারবার ,
তোমার স্পর্শে কেটে যাবে নীরবতা ভরা ব্যাথা।
বেহাগের টানে কেঁদে ওঠা  যুবতী চাঁদ্‌, 
আকাশের সকল গ্রহ বা তারা ,
সবের সামনে দুহাতে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলতে পারবো,
"এখনো তো তোমাতেই সীমিত আমি -
বিদায় জীবন -বিদায় মরণ -বিদায় অনন্যা -
বিদায় জাগতিক হাসি কান্না  "।


৭) ক্লান্ত কোন এক স্বপ্নের  শেষে ,

আসবেই তুমি নিয়তির বেশে ,
চেপে ধরে দুই বাহু ডোরে ,
সাথে নীল সে নদীর গান ,
জোয়ার ভাঁটায় ভাসায়ে নেবে ,
বাঁধা রীতির প্রান ।
সুর স্বপ্নের তাল কেটে যাবে ,
মুক্ত তো হবো আমি ,
অসীমতার যাত্রাকালে ,
শুধু পাশে থেকো তুমি ।
অসীম অনন্ত আঁচল সে তোমার,
মেলে দিও তোমার আমার পরে,
আশ্রয় দিয়ে ধন্য করো ,
তোমার সুধা সাগর পাড়ে....



৮) 
যে জীবনে  বেঁচে আমি  আছি এখনও ,
নিশ্চিত্‌  আগামীতে  তো  থাকবো না ,
কিন্তু কোন সে বাঁধা এখনো আছে ্‌?
যে তোমাকেও আমি ডাকবো না .!

গোধূলি  যদিবা কাছেই আসে ,
ডাক দিয়ে যায় যোজন দূরে   ,
কিসেরই বা  সে ব্যাস্ততা মোর ?
যে দাড়াবো না তোমার দ্বারে .!

জীবন মৃত্যু  মিলেমিশে যাবে ,
সকলি যাবে অনন্তপানে  ,
তবু স্বপ্নের  কিছু কথা  আর  গান
থেকেই যাবে  কানে কানে.।
           
৯) অনাদি অসীম এই আকাশের নীচে ,
ধোঁয়া মাখা কালচে জগতের বুকের  ভিতর,
খনিজের মতোই চাপা পড়ে থাকে কতো না অতৃপ্ত স্বপ্নের স্তূপ ।
শুধু চাওয়া আর পাওয়ার নামেই চলে ,
হাজারো মনের আনাগোণা...............
তোমার শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে জুড়ে থাকা বাতাস ,
ধীর শান্ত গতিতে ছুঁয়ে যায় আমায় .........
 আর আমারি বুকের ভিতর লুকিয়ে থাকা আরো একটা আমি কে ।
চলে ফুল ফুটে ঝরে পড়ার নিয়ম,
স্বার্থের মায়াজালে আটকে থাকা আমি ,
ফুটে ওঠা কুঁড়ি না দেখে ,
হাহাকার করি ঝরে পড়া শুকনো পাপড়ী দেখে্‌ ...........................
অবাধ্য  মন চায় তোমাকেই নিয়ে একটা আলাদা পৃথিবী গড়ি,
যেখানে সময় আর শান্তি হবে অবাধ ও অসীম।

১০) 

শেষ  বিকালের বিদায়কালে নক্ষত্র  লাল হয়ে আসে    ,
কেঁদে ওঠা আকাশের ঠোঁটে ঠোঁট রেখে দীগন্তে পাড়ি দেয় ,
ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দেয় কি ?
জানা নেই ।

সারাদিনের উড়ে চলা পাখিরা বিদায় জানায়,
বলে, " আবারো আসবো " ..................
সকলেই আসবে কি ?
জানা নেই কারো !

চাঁদ আসে কালো আকাশের বুকে সঙ্গী হতে ,
আলিংগন করে ... একটু একটু করে ক্ষয়ে যায় ......
সারাদিনের বয়ে চলা মুখগুলোকে আমিও বিদায় জানাই,
মনে ভাবি , "হয়তো বা এই শেষ ------
সেই সে এক অনন্যা  আমাকেও গ্রাস করে ,
যেভাবে গ্রহণ লাগে নক্ষত্রের ঘরে  ..............................

১১) তোমার অস্তিত্বহীন অস্তিত্বটা ,
নিশ্চীতভাবেই অস্বস্তিকর,
কিন্তু আরো বেশী অস্বস্তিকর,
সেদিনের অস্তিত্বহীন,
কাল্পনিক অস্তিত্তের স্মৃতিঘর ।
ভবিষ্যত হয়তো বা ভরে যাবে ফুলে,
নতুবা শান্তির পারাবার কূলে ,
কিন্ত সেদিনও একটা  অস্তিত্বহীন অস্বস্তি, 
থেকেই যাবে জীবন মৃত্যুর মূলে  । 

১২)
তোমাকে ঠিক সেভাবে তো  ভালোবাসিনি,
যে রোজ ভালোবাসতেই হবে,
আবার তোমাকে এমনও ভালো লাগেনি,
যে  আমাকে  রোজ ভালো লাগাতেই হবে।
তোমাকে সেভাবে অনুভবও তো  করিনি,
যে আমার প্রতি অনুভূতিতে তোমাকে থাকতেই হবে,
সামান্য যেটুকু শুনেছি তোমায়,
সে তো রোজ কানে বাজেনা,
যদিবা কিছুটা স্মৃতিতে থাকে,
সেটাও  মুখে বলা বা সাজেনা।
সামান্য যেটুকু দেখেছি তোমায়,
তাকেও  বুঝি দেখা বলেনা,
যদিওবা তোমায় দেখেও থাকি,
সে তবে এখনো নিজেরই ছায়ায়।

১৩) 
গোধূলির শান্ত অবকাশে,
দূর আকাশে কিবা হিমেল বাতাসে,
দূর থেকে দূর,
সীমান্ত সূদুর,
কোথাও একটা সুর বাজে।
সেই সুরে হয়নি কোন গান,
শুধু অকারণে পোড়ে কান,
সে সুরে ছন্দ নেই, বন্ধন নেই,
নেই তো অযথা কানাকানি,
তবু যে শব্দ শুনি,
কিবা আছে তারও মানে?
তপ্ত স্বত্বা যে  মোর,
হয়তো বা কিছু জানে।
অস্তাচলের অচল আলোকে,
অন্তরের অজানা শোকে,
তবু যেন ডাক শুনি -
সেকি সুর নাকি চিরন্তনের বানী ?
দেখা হবে প্রভাতের কালে,
কোনো চেনা মন্দিরে বা সূদুর প্রান্তরে,
জানা বা অজানার দিনে,
অন্য সে অনন্যার গানে।

১৪) 
নিয়তই নিয়তির গান -বিশ্ব চরাচরে,
প্রেমের সুর বাজে - শুনি স্বপ্নের ঘরে।
নিয়মেরই নিয়তি মেনে - অন্তরে শুনি ধ্বনি,
কি বা সত্য   কি বা মিথ্যা -কিভাবে কাহারে গুনি?
যে নিয়মে জোয়ারে ভাসি- ভাটাতে পাই টান,
সে নিয়মেই বেড়া ভেঙে - শুনি যে তোমারই গান।
ছোট্ট সে হাতের প্রান্ত ধরে - কথা ছিলো চিরতরে,
মৃত্যু হারায়ে দেবো  -আর  নিয়তিরে জীবন ভীড়ে।   
পলকের কান্না বা পলকের এই হাসি,
অন্তরের পাথেয়  হবে - হবে স্বপ্নের রাশি।
এখনো সূর্য ওঠে - হাসে আকাশের চাঁদ,
স্বপ্নের আগমনে দেখি নিয়তিরই  ফাঁদ।

১৫) 

হেথা,
  দ্বীপ নেভা এই রাত্রি শেষে,
  রাত্রিও  আসে প্রভাত বেশে,
  তবু  আসে নাই কেউ  পথিক বেশে,
  এই ক্লান্ত  আমাদের পথের দেশে।

হেথা,
   এই জগতের এই অসীম সীমায়,
    আমরা  ভাসি স্মৃতির হাওয়ায়,
  তবু আসে  নাই কেউ  পথিক বেশে,
   এই ক্লান্ত  আমাদের পথের দেশে। 

হয়তো, 
কিছু কথা ভুলে - কিছু রঙ দিয়ে,
 কোন   ফুল যদি কেউ দেখতো ,
সব ব্যাবধান ধুয়ে মুছে যেতো,
 তোমার আমার   শোভাতে।

কিন্ত  তবুও,
আসে  নাই কেউ পথিক বেশে,
এই ক্লান্ত আমাদের  পথের দেশে ।

১৬)
জানি হয়তো বা আছো কাছেই,
তবুতো  হয়না তোমাকে দেখা,
খোঁজার নেশায় ক্লান্ত হয়েছি,
এখন আমি  শুধুই একা।

শ্রান্ত- ক্লান্ত পথের ধুলায়,
স্বপ্নরা হয়ে গেছে পর,
একাকিত্বের বন্ধু আমি -,
বাঁধা হয়নি কো  ঘর।

নিজেকে নিয়ে চিন্তা ভুলেছি,
ভুলেছি কে আমি ছিলাম  ,
নিজের  সীমায় চলতে গিয়ে,
অনেক কিছুই পেলাম ।

শেষের পথের নিশানা ধরেও,
যদি ফিরেই আসো তুমি ,
দেখবেই তুমি আমিই আছি,
আর তুমিও আছো সেই তুমি।

১৭) 

সে বহু বহু দিন আগে,
কোনও এক অজানা নদী প্রান্তরে,
অরুন   তখন   অস্তাচলে,
পাখিরা ফিরিলো নীড়ে।
কিরণ তখন   বসছে পাটে,
ভীড় জমেছিল নদীর ঘাটে,
ক্লান্ত পথের শ্রান্ত চাষি,
আর রাখাল ছেলের বাশী,
সকলেই খোঁজে ঘরে ফিরে কারো,
অপেক্ষা মাখা হাসি।
যাত্রা পথের সব  জয়গান,
আর সুর গিয়েছিল থেমে,
সূর্য তখন অস্তাচলে,
আলো এসেছিলো কমে।
দূরে  ভেসে  যায় নৌকার পাল,
চলে  কোন‌ সে দীগন্তপানে,
আমার  প্রানের সুরটি মিশেছিল ,
কোন অজানার গানে ।
সকলেই  ফেরে আপন কূলায়,
ক্লান্ত আমি পথের ধুলায়,
কাছে থেকেও দুই পা ফেলিয়া,
এলেনা কেবলই তুমি,
নদী প্রান্তরেই রয়ে গেলাম,
নিঃসংগতা মাখা  আমি।

এবার পরুন---চিঠি


PROLAY SANKAR DEY (S.V.O)




 



Post a Comment

0 Comments