একটা সামান্য ঘটনা




DESTINY IS NEVERLAND AND NEVERLAND IS DESTINY. 
        PEN- PROLAY . 
        INK - ANANYA.
        S.V.O
    
    




একটা সামান্য ঘটনা

স্কুলে তার বন্ধু বলতে কেবল লিজা  । নিজের  জগতে তার এই একটি মাত্র বন্ধু ছিলো ,   যার কাছে সে সবই বলতে পারতো ।  রোজ এক বেঞ্চে বসা , স্কুল  গাড়ীতে  একসাথে বসা , টিফিন ভাগ করে খাওয়া আর মাঝে মাঝেই স্কুল থেকে ফেরার সময়  গাড়ী থেকে নেমে লিজার মায়ের কাছে থাকা । সে জীবনে প্রথমবার নিজের মামাবড়ি যাবে , কিন্তু যাওয়ার আগে কিছুতেই এটা সে লিজাকেও  বলবে না - এটা ভেবে বেশ খারাপই লাগছিলো । কারন এটা কেউ জেনে গেলে , তার যাওয়াই বন্ধ হয়ে জেতে পারে । 

 ছেলেটি  চাইতো  না কিছুই ,  তবু তাকে দেওয়ার লোকের তেমন  অভাব ছিলোনা ।.কিন্তু  কেউ  যেন  জন্মের সময়েই তাকে শিখিয়ে দিয়েছেন ,  কোনো কিছুর আশা না করতে। যে বয়সের শিশুরা একটার পর একটা বায়না  করে  বাপ মা কে পাগল করে ,  সেই বয়সেই সে ছিল  একেবারে উল্টো   । কেউ  তাকে কিছু দিলে নেয়না ,  কিছু খেতে দিলে খায়না  ।
 
বেশ চুপচাপ , শান্ত আর জেদি । তার কাছে না মানে না আর হ্যা মানে হ্যা ।  সবকিছুতেই একটা মাজাঘষা ব্যাপার ।  কোনকিছুই তার অতিরিক্ত ভালো লাগেনা । তাকে নিয়ে সকলে আছে , কিন্তু সে কাউকে নিয়ে নেই ।   যে শিশু হাজার না পাওয়ার মাঝে বিশেষ  কিছু আকড়ে  থাকে সে  পরিবারের কাছে মাথা ব্যাথার  বিষয় , কিন্তু যে  শিশু সবকিছু পেয়েও , কোনকিছুকেই তার মাথায় রাখেনা -  সে তার পরিবারের  সে  কাছে আরো চিন্তার বিষয়।                                                                                                                                
 তবু বাবা, জ্যাঠা  যেদিন নতুন কিছু  খেলনা আনে সে দিন তার বেশ ভালই লাগে। কিন্তু সেই ভালোলাগাও খুব সাময়িক ।  . 

স্কুল না থাকলে দুপুরের অবসর কাটে খেলনা গাড়ি  নিয়ে ।   এক একটা কি গাড়ী  একেক রকম ।  হাত থেকে যেন উড়ে বেরিযে যায়। . দুপুর বেলা  জেঠিমা যখন লোহার খাঁচার  মত বারান্দায় আটকে রেখে নদীতে স্নান করতে যায় তখন সেই সব দুরন্ত গাড়িতে করে কোন কল্পনার রাজ্যে  হারিয়ে যায় , সেসব কথা  কিছুটা বোধবুদ্ধিহীন ।   মাঝে মাঝেই মনে হতো  এই সব গাড়ি করে  কি  সে কোনদিন  পারবে তার মা এর সাথে একটু  দেখা করে আসতে ? ছেলেটি কাউকে প্রশ্ন করেনা এব্যাপারে । তার যতো প্রশ্ন -সবই নিজের কাছে । উত্তরও নিজের । 

রোজ দুপুরের একটা খেলা ছিল তার মা   এর সাথে কাল্পনিক গল্প করা।  এজন্য মাঝে মাঝেই সে একা থাকলে দেখা  যেত আপন মনে সে বকেই চলেছে।  ব্যাপারটা অন্যের কাছে পাগলামি মনে হলেও মাতৃহারা অবোধ শিশুর কাছে ছিল  তার সব থেকে প্রিয় খেলা।   

 অনেক আগে থেকেই সে শুনে আসছে তার মা মারা গেছে , কিন্তু তাতে তার কিছুই এসে যায়নি। যাকে সে জীবনে দেখেনি , তার অভাব সে কখনোই আলাদা করে অনুভব করেনি । বিশেষ করে জ্যাঠা -জেঠী আলাদা করে তাকে কিছু অনুভব করার সুযোগও দেয়নি । কিন্তু শিশুমনের অভাব বোধ করা আর কৌতূহল বোধ করার বিষয়টা খুব সহজ নয় । ফলে দেখা চোখে যার প্রয়োজন নেই , মনের কাছে  সেটাই হয়ে ওঠে চরম আকর্ষণের বিষয় ।   তাই  স্কুলের গাড়ি থেকে নামার পর যখন দেখে তার ক্লাসের অনেকে দিব্যি ভারী ব্যাগ টা মায়ের কাধে চাপিযে হাটছে আর তাকে ওই এক মস্ত  ব্যাগ একা একা রোজ টানতে হয়  , তখন মাঝে মাঝে মনে হয় একটা মা থাকলে আজ সেও ওরকম খালি হাতে  নাচতে নাচতে আসতে পারতো।   
                                     
 নিজের  মাসিদের সে জীবনে দেখেনি - তারাও তাকে দেখার দরকার মনে করেনি । দাদু দিদার সাথে মাসে একবার করে তার দেখা হয় । তারা এসে দেখা করে যান । এটাই নিয়ম হিসাবে হয়ে আসছে এতোদিন । কিন্তু এবারের ব্যাপারটা একেবারেই আলাদা । এতোদিন দাদু-দিদা তার বাড়িতে এসেছে আর এবার সে নিজে কাল যাবে দাদুর বাড়ী । একটা উত্তেজনা , কল্পনা বা আরো কিছু - সকলে মিলে তাকে অস্থির করে তোলে । একটা  অজানা অনুভুতি ক্রমশ জাল বিস্তার করে  তার মাথায় । 

  পরদিন সকাল বেলা   
 বাস  নেমে বাবার প্রবল আপত্তি উপেক্ষ্যা করেই সে নিজের পায়ে হেটে এগিয়ে যেতে থাকে । নির্বোধ ছেলেটি  ভাবার দরকার মনে করেনি " এই  গ্রামের মাটির উপর  দিয়ে নিজের পায়ে হেঁটে  আসাটা তার অধিকার - এই মাটিতেই তার মায়ের পায়ের ছাপ পড়ে আছে -  "  সামান্য পথ  যাওয়ার পর  দেখে তার দাদু   হাসতে হাসতে প্রায় দৌড়ে আসছে ।   তাকে একটাও কথা বলার সুযোগ  না দিয়ে কোলে তুলে এমন জোরে চেপে ধরে সে বেচারা হাফিয়ে ওঠে, সেখান থেকে একবারে সে হাত  বদল হয়ে চলে আসে তার দিদার কোলে । 
 মেয়ে অকালে গেছে  - সে বেঁচে থাকলে  কি ছয় কিলোমিটার পথ পেরিয়ে প্রায় ছয় বছর পর  এই ছেলে এখানে আসতো ?  বৃদ্ধা  তার সকল স্নেহ দিয়ে ছেলেটিকে  কে চেপে ধরে  রাখে ।   
 তিন চার  দিন আগে   থেকেই  বুড়ো -বুড়ি  অনেককেই  বলে রেখেছিল ছোট নাতির আসার কথা ।  একে তো এই ছেলে  জীবনে কোনদিন এবাড়ি আসেনি ।  আর তার উপর তাকে একবারের জন্য এখানে  আনতে বহু কাঠখড় পোড়াতে  হয়েছে । 
বৃদ্ধার শুধু মনে হয় তিনি তার যৌবনে ফিরে গেছেন । মনে হয় এই সেদিনের কথা । তিনি এবাড়ির বউ হয়ে এসেছেন । কপালের লাল সিঁদুরের চাইতেও বেশি লালচে তার গায়ের রঙ । তবে  তাকে বরন করে নেওয়ার জন্য আলাদা কেউ নেই । বরন করার জন্য যেমন কেউ নেই , তেমনি তাকে কিছুতে বারন করারও কেউ নেই । 
নববধূকে উপহার হিসাবে  তার কোলে তুলে দেওয়া হয়   ছোট্ট একটি কন্যা সন্তান । নিতান্তই ছোট্ট একটা শিশু ।  স্বামীর আগের পক্ষ্যের মেয়ে । হাসপাতালে মেয়েটির জন্মের সময় তার মা মারা যায় । প্রিয় স্ত্রীকে  হারিয়ে সমস্ত রাগ গিয়ে পরে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর উপর। তাকে হাসপাতালেই ফেলে রেখে আসেন । যে মেয়ে জন্ম নিতে গিয়েই তার মায়ের মৃত্যু হয় - তার মতো একটা জ্যান্ত শয়তানকে বাড়িতে আনা যায়না ।  কিন্তু  মুক্তি নেই । সামান্য এক চাকরির সুত্র ধরে  হাসপাতালের লোকজন  তাকে ধরে ফেলে । তাতে সাহায্য করেছিলো এক আত্মীয় । ফলে যে শিশুকে তিনি হাসপাতালে রেখে পালিয়ে এলেন , সেই শিশুকন্যাই এসে উঠলো তার নিজের বাড়িতে । 

ভদ্রমহিলা  নিজে কোনদিন মা হবেন না - বরং এই মেয়েটিকেই মায়ের মতো দেখতে হবে সারাজীবন - এই ছিলো তার স্বামীর সাথে চুক্তি ।  নিজে মা হতে পারেননি , কিন্তু সেই মেয়ে তার নিজের মেয়ের থেকেও বেশি কিছু ছিলো তার কাছে ।   তারপর সেই মেয়ে বড়ো হয়েছে , নিজের খুশিমতো নিজের পথ বেছে নিয়েছে । লেখাপড়া  , প্রেম  , বিয়ে , সংসার ,  মা হওয়া । 

 মাত্র একুশ বছর  বয়সেই তার নিজের জীবনের  খাতার পাতা শেষ ।   যাওয়ার সময়  এই অবিরত চলমান পৃথিবীর বুকে তার শেষ চিহ্ন  রূপে রেখে  যায় এই অসহায় শিশুকে।
 
 আজ  বহু বছর পর  এই ছোট্ট গ্রাম্য পরিবেশে  এক  সন্তান হারা বৃদ্ধা এবং এক  অবোধ মাতৃহারা  শিশুর মাঝে কে যেন এসে  তাদের মনের এক গিঁট বেধে দিলো ।   ছেলেটি  এই প্রথমবার বাড়ির বাইরে কারো  বুকে মাথা রেখে নিজের মনে নখ কাটতে থাকে ।  অবিকল  সেই মুখের ছাপ , রোগা  ফর্সা  ছোট চেহারা , নিতান্ত  কচি হাত পা , আর মাথা ভর্তি কোকড়া  চুল। 
বাতাস এখন ভারী নয় - উজ্জ্বল সকাল , একটা আলাদা মুক্তির স্বাদ । সারা বাড়ি জুড়ে আড়াল থেকে কেউ একজন যেন উঁকি দিয়ে গেলো - এখানকার বাতাসে এখন মুক্তির স্বাদ - অস্ত্বিত্বের আত্ম্যপ্রকাশের স্বাদ , অধিকারের স্বাদ , ঘরে ফেরার স্বাদ নিয়ে সকলের অজান্তে  কেউ  যেন শান্তির গান গেয়ে গেলো ।

একটা সময়  দিদার  গলাটা জড়িয়ে আস্তে আস্তে জানতে চায় , " আমার  মা কি  এই  বাড়িতে  থাকত ?"  
সামান্য একটি কথা - বৃদ্ধার বুক কেঁপে ওঠে , দুচোখে জলের ধারা ।  ছেলেটি  দুমদাম করে উঠে যায় আর নিমেষে ফিরেও আসে দিদার কাছেই  ।  নিজেই  আস্তে  আস্তে   উঠে দিদার  কানের   কাছে মুখ  এনে জানতে চায়  " আমি যাওয়ার  সময় তোমাদের বাগান থেকে কয়েকটা  ফুল আমায় দেবে?"
 কি বোকা  এই মাতৃহারা শিশু ? শুধু কয়েকটা  ফুল কেন? এখানে যা যা আছে সবই তো তোমার।  
না না সব আমার লাগবে না , আমি দুটো মাত্র নেবো । মনে মনে তার হিসাব হয়ে যায় - একটি স্কুলের প্রেয়ার শেষে আন্টির সাথে গিয়ে রাখবে মাদারের ছবিতে আর একটি দেবে লিজাকে । স্কুলের শুরুতেই আন্টিদের সাথে মাদারকে  আর বন্ধুদের ফুল দেওয়াটা তাদের অভ্যাস । 

 কিছু সময় পর দাদু , দিদা আর বাবার মাঝে খেতে বসে পুরো অবাক হয়ে যায়।  বড়দের মতোই তাকে সব আলাদা আলাদা বাটিতে খাবার দেওয়া হয়েছে ।   কিন্তু এত খাবার সে কোনদিন ই খায়না ,   তাছাড়া  জেঠিমা তাকে ভাত মেখে রোজ নিজে হাতেই খাইয়ে দেন , ..............কিন্তু একথা সে এখানে কাউকে বলতে না  পেরে চুপ করে বসে থাকে। এতদিন পর্যন্ত তার জেঠিমা তার মা এর অবর্তমানে কতটা  স্নেহের  মাঝে রেখেছেন বা তাকে ছাড়া এই অবোধ শিশু সামান্য ভাত তাও একা খেতে পারেনা  , তা দাদু বা  দুরের কথা তার নিজের বাবাও জানত না। 
"কি হলো দাদু খাচ্ছ  না কেন"? চুপ করে বসে থেকোনা।  কিভাবে কি যে খাবে সে কিছু না বুঝতে  পেরে  মাথা নিচু করে ভাত নিয়ে নাড়া  চাড়া  করতে থাকে ।
........  অসভ্য ছেলে ভাত না খেয়ে ফাজলামি করছ কেন?  আমি তো খাচ্ছি তো।  
না তুমি খাচ্ছোনা । দু-এক দানা ভাত নিয়ে মুখে ফেলে বলে আমি খাচ্ছি ।
 ফের মুখে মুখে তর্ক করলে  পিটিয়ে তোমার পিঠের চামড়া তুলে দেব।  
 তার দাদু  যে  জঘন্য বদ মেজাজের লোক এবং তার মায়ের মৃত্যুর জন্য এই এই অত্যাচারী লোকটাও  দায়ী  , তা  এই শিশুর জানার কথা নয়।  সে একবার বাবার দিকে একবার দিদার দিকে তাকায়।  কিন্তু না তার বাবা না তার দিদা জানে যে এই শিশু  কি  অসীম যত্নে তার জেঠিমার কাছে থাকে।  ফলে একটা  সহজ বিষয় কারো মাথায় এলোনা যে , " "  সে একা আসলে  খেতেই  পারেনা "।   তবু দাদুর ভয়ে সে কোনমতে  একটা তরকারির বাটি   নিয়ে  উপুর করে  ফেলতেই দাদু এমন তাড়া দেয় , সে ভয়ে কাঠ হয়ে যায় । কি হলো মেয়েদের মত কাঁদছ কেন ? বলে চুলের মুঠি ধরে ঝাকা দিতেই সে পুরো কেঁদেই ফেলে।  
                                                                             জীবনে এই প্রথমবার সে দাদুর  বাড়ি  এসেছে আর এই বাড়ির অমানবিক  নিয়মের সাথে বা এরকম  ভয়ংকরতার  সাথে   সে মোটেই পরিচিত না।  এই বাড়ির প্রতিটি দেওয়াল , দরজা , জানালা - তারা নিতান্ত জড় হয়েও জানতো , এখানে প্রতিঘরে আর্তনাদ , রক্ত আর নির্মমতার  দাগ লেগে আছে ।  এখানে আভিজাত্যের নামে নিয়ম , নিয়মের নামে বেহিসাবী অত্যাচার আর মেনে নেওয়ার নামে বশ্যতা স্বীকার করাই জীবন । 

 কিন্তু  নিয়ম আর বিচারকে  ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া  কিশোরীর সীমাহীন বিদ্রোহও হয়েছে  প্রতিদিন ।  ভিতরে ফোকলা হয়ে যাওয়া বনেদীয়ানাকে চাবুক আর লাঠির জোরে ধরে রাখার চেস্টা ।  রক্তের  স্রোতে বয়ে চলা যে চরম নিষ্ঠুরতার  জোরে তার দাদু তাকে চুলের মুঠি ধরে ঝাঁকাতে  লাগলো ,  সেই রক্তই এই অসহায় মাতৃহারা ছেলের  শরীরেও  ছিল। দশটি মাস সে তার মায়ের পেটে থেকেছে , আর পৃথিবীর আলোতে থেকেছে তার কোলে থেকেছে  প্রায় দেড় বছর ।  নিয়ম সে মেনে চলে । কিন্তু প্রকৃতির নিজের নিয়মেই -বেনিয়মী ভাবে নিয়মকে অস্বীকার করা তো তারও রক্তেই আছে ।  সে এর আগে কখনো এভাবে মার খায়নি। মার খেয়েছে- কিন্তু মরে তো যায়নি । ফলে   চিৎকার  করে ওঠে তুমি আমায় মারলে কেন?  আমি কিছুতেই  খাবোনা  , কিছুই খাবোনা।  এই তেজ এই স্পর্ধা সকলের থাকেনা।  
"   শেষ বার বলছি  ভাত খাবি কিনা  ? " 
  না না না - আমি আমার বাড়িতে যাবো ।   কথা শেষ হওয়ার সাথেই  ছোট্ট শরীরটা এক লাথিতে  ছিটকে যায় টেবিলের তলায়।  কিছু  বোঝার  আগে সেখান থেকে তাকে  টেনে বার করে ফেলা হয় মেঝেতে ।  এ বাড়ির প্রতি দরজার কোনে বেতের লাঠি  রাখা থাকে  ।  কোথাও কোন নিয়ম ভাঙলে , সেখানেই তার শাস্তি হয় । হাওয়ার গতিতে সেই  বেতের লাঠি পরতে থাকে ছয় বছরের ছেলের ওপর ।  একবার  মাথায় , তো পরেরটা   পিঠে , পিঠ ঠেকে বুক , বুক থেকে মুখে -  এক একটা আঘাতে ছিটকে ছিটকে যায় , মেঝের ওপর পরে পরে মার খায় কুকুরের মত ,    প্রতিবেশিরাও এসে পরেছিল।   সকলে  মিলে যখন তার দাদু কে থামালো সে  নিস্তেজ।  ফর্সা শরীরটা নীল্ হয়ে গেছে , শিরা ফুলে গেছে ,   কোথাও কোথাও রক্তের দাগ।   যে পথ দিয়ে সকালে সে বুক ফুলিয়ে হেঁটে গেছিলো , মাত্র ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই সে যখন ফিরলো , তখন সে আধমরা ।
অদৃশ্য বিধাতা তার সব অক্ষমতা দিয়ে দেখলেন , কিন্তু মাতৃহারা ছেলের  শৈশব অথবা নিজের জড় মিথ্যা ভক্তির মুক্তি  - কোনটাকেই তিনি রক্ষা  করতে পারলেন না । শুধু এটুকু বুঝে গেলেন একজন বোধযুক্ত মানুষ আজ একটা সহজ সরল ছোট্ট ছেলের মনে যে ঘৃণার জন্ম দিলেন -  সেই ঘৃণা আর  উপেক্ষা  আজ তা পৃথিবীর জীবকুলের নিয়মে এক প্রজন্ম থেকে আরেকে প্রজন্মে পৌঁছে গেলো । 
শাস্ত্র - ধর্ম -পাপ- পুন্য -স্বর্গ -  নরকের কথায় এই ছেলে আর সোজা হবেনা  । আজ সবে সে মানুষের নির্দেশ অমান্য করেছে আর কাল বিধাতার পালা । 
কারন এই সামান্য ছেলে এই সামান্য বয়সেই সৃষ্টির অসামান্য শিক্ষা পেয়ে গেছে । 
" মা ছাড়া মামাবাড়ির আবদার " নামের কিছুই হয়না । 
( সত্য ঘটনা ) 

  
 THANKS.
 S.V.O                                                                                           
 

না পাঠানো চিঠি



Post a Comment

0 Comments