DREAM AND DESTINY MAY LEAD TO THE NEVERLAND .
PEN-PROLAY.
INK-ANANYA. 
S.V.O





কলিকাতার এখন বুদ্ধিজীবি কারা ? 
মুলত তারাই , যারা কোন একসময়ে কোনভাবে একটু নাম করেছিলো , সেই সময়ে হাতে কিছু টাকা জমিয়ে রেখেছিলো , এখন কাজ বলতে মাঝে মাঝে দোকান , শপিং মল উদবোধন করা এবং সপ্তাহের প্রতিদিন , প্রতি ঘন্টায় নিজেকে মিডিয়ার জন্য রেডি রাখা - যাতে ডাক এলেই " জি হুজুর " বলে হাজিরা দেওয়া যায় । সকলেই ডাক পাননা - তারা সময় নষ্ট না করে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেই লাইভে চলে আসেন । 

এছাড়াও কিছু আছে -যারা মাঝে মাঝে চ্যানেলে চ্যানেলে বিচারকের অভিনয় করেন । নাচ , গান , অভিনয় - সবই হট টপিক । নিজেরা বাজার কাঁপানো গান গাইতে পারেননি , হিট সিনেমা বানাতে পারেননি , কেউ সেভাবে এদের সংগ্রহ করেন না । তবুও এনারা একজন একজন দিকপাল । এদের পালতোলা নৌকা সবদিকে চলে । হাওয়া যেদিকে -এনারাও সেদিকে । এরা ক্যারম বোর্ডের গুটির সমান । ধাক্কা , গুঁতো খেয়ে যেভাবে হোক , একটা পকেটে ঢুকলেই হলো । 
 এদের অনেকেই মুলত সংগীত জগতের লোক । এরা কোম্পানির থেকে পাওয়া স্বরলিপি আর ফ্লোর ম্যানেজারের সুরে সুরে গান গেয়ে অন্যের গানের বিচার করেন । অনেকে আদর করে এনাদের বলেন , " বুদ্ধিজীবি" । 

হেমন্ত মারা গেছেন ২৫ বছর প্রায় । মান্না দে কিছুদিন আগে মারা গেছেন , শেষ রেকর্ডিং করেছেন প্রায় ১২ বছর আগে । কিছুদিন আগে গেলেন - যতদূর জানি , শেষ রেকর্ডিং করেছেন প্রায় ১৫ বছর আগে । মানবেন্দ্র , শ্যমল , পান্নালাল , সুধীন , প্রতিমা - এই সব নামগুলো তো আগেই গেছে । 

ভেবে দেখুন , প্রায় তিরিশ বছরের সময়কাল । এই দীর্ঘ সময়ের ব্যাবধানে বেতিক্রমী নচিকেতা চক্রবর্তী ছাড়া , একটা গায়ক বা গায়িকার নাম একবারে বলা যায় তার অন্তত একটি নিজস্ব গানের জন্য ? 
যারা নিখাত বাঙ্গালীয়ানায় বিশ্বাস করেন , তারা নিশ্চই মানবেন গত তিরিশ বছরে এক নচিকেতা ছাড়া আমাদের গানের জগতে সত্যিকারের প্রাপ্তি বলতে , " টুনীর মা " , " বৌদি আমার মডার্ন " অথবা " লাল শাড়ী পরিয়া কন্যা " - কিছু গান , যা লোকে শুনেছে এবং তার থেকে বড়ো কথা গানগুলো নতুন । তাহলে বাকীরা ? 
হয় শ্রেয়া ঘোষাল বা অরিজিত সিং এর মতো সারা দেশের হয়ে গেছে অথবা ভাগাড়ে বসে হটাত করে কাফী , কানাড়া , বা দরবারী শোনাচ্ছেন ফোনের মাধ্যমে । সোজা কথা বাংলায় বসে বাঙালীর জন্য গান গেয়ে তার থেকে সারা বছর টাকা কামানোর ক্ষমতা সেভাবে কোন গায়ক বা গায়িকার আর নেই । 

কিছু পন্ডিত আবার বলেন যে , বাংলার মানুষের গানের রুচির কোন পরিবর্তন হয়নি এবং আমরা নাকি কিছু নির্দিষ্ট বেক্তি আর রবীন্দ্রনাথের গান ছাড়া আর কিছু শুনতে শিখিনি । 
একেবারে মিথ্যা নয় কথাটা । কারন রাস্তায় বিনা পয়সার মাইকে চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে অনেক কিছুই শোনা যায় । আসলে রাস্তার পোস্টে বাঁধা মাইকের থেকে নেমে এসে মানুষের সংসারে গিয়ে বাজতে হলে - সেক্ষেত্রে সেটা শুধু গান মাত্র নয় । গীতিকার , সুরকার , গায়ক / গায়িকা, আরো অন্যান্য অনেক অনেক শিল্পীর তপস্যার ফল । 

আপনার গান শোনেনি মানে , একটা পুরো জাতিকে বলে দিলেন , যে তারা বাঁধা কিছুর বাইরে কিছুই চেনেনা ? বা রবীন্দ্রসগীত আর কিছু শিল্পীর গান ছাড়া - লোকে কেউ কিছু শুনতেই চায়না ? 

আপনার নিজের গান না থাকলে , চেপে যান । কারন বাঙালী এনরিক থেকে মাইকেল জ্যাকসন , মাইকেল জ্যাকসন থেকে লরা ব্রানিগান , লরা থেকে ব্রায়ান আডামস আর সেখান থেকেই চট করে আলি আকবর খানের সরোদ , রবি শংকর বা নিখিল বাবুর সেতার , পণ্ডিত ভীমসেন জোসী বা সালামত আলি -নাজাকাত আলির অনবদ্য সৃষ্টি গুলো নিশ্চই শুনে থাকেন । করিম খান , আমীর খান , মুনাব্বর আলি খান - এরা সকলেই  যথেষ্ট জনপ্রিয় । বাঙালী তো টাকা খরচ করেই ফসিলস , ভুমি বা আরো অনেকের গান শুনেছেন । আসলে ভালো কিছু হলে , তা কেউ না কেউ ঠিকই চিনে নেয় । 

 কিন্তু আজকের দিনে আপনাদের এককভাবে কোন  তো গানই নেই -  তাও গায়ক হয়েছেন , আবার বুদ্ধিজীবীর দলে এসেছেন । অন্যের বিচার করছেন । দু পয়সা করে খাচ্ছেন - তো খান । আপনাদের টাকার দরকার -পেয়ে গেলেই হলো । বেশী বোঝার কি দরকার ? 

সিনেমার অবস্থা তো আরোই খারাপ । ভালো সিনেমা নিশ্চই চলছে । কিছু হয়তো প্রচারের অভাবে মার খাচ্ছে । কিন্তু  আপনাদের মতো কিছু অপদার্থ সেখানেও আছে । 
গত কয়েকদিন আগে এক স্বঘোসিতা স্বনামধন্যা অভিনেত্রী জানালেন যে " তিনি চরিত্রের প্রয়োজনে নিজের স্তন তুলে ধরতেও পারেন " । 
পোড়া কপাল আপনার । আপনার জন্মের আগে " রাম তেরী গঙ্গা " সিনেমা হয়েছে । কোন একটা অভিনেত্রীর বা সিনেমার গুনগত মান - তার স্তন দেখে ঠিক করা হয়না । আগে অভিনয়টা করতে হয় । কিন্তু বাজার খারাপ । হয়তো আশামতো সাড়া পাননি । কিন্তু বাজার লাগবে ।  
পরের দিন তিনিই আবার মিডিয়াকে জানালেন যে " আজকাল উনি শাড়ী পরলে , নীচে প্যান্টি পরেন না " । 

আর কোন টপিক পেলেন না আপনি ? যেখানে প্রায় ২০% লোক ছেড়া পোশাকে ঘুরে বেড়ায় , দোকানের শাটার নামলে , একটু আলো কমে এলে ফুটপাতবাসীরা পশুর মতো সংগম করে , যেখানে একটা কাজ চাইতে গিয়ে গন ধর্ষিতা হতে হয় - সেখানে আপনি আপনার শারীর নীচের প্যান্টির কাহীনী বলতে এসেছেন ? 

একজন অভিনেত্রী আবার শেষ বয়সে এসে সোশ্যাল মিডিয়াতে বলেই চলেছেন - কবে কোন এক পরিচালক/ প্রযোজক নাকি তাকে ধর্ষণ করতে চেস্টা করেছিলো । ধর্ষণের মতো একটা জঘন্য অপরাধের চেষ্টা কেউ করে থাকলে , কেন আপনি তার নাম প্রকাশ্যে আনছেন না , কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেই চলছেন । আপনি যদি এভাবে  অপরাধীকে আড়াল করতে থাকেন , তো সেটাও কী অপরাধ নয় ? 
অথবা আপনি থানাতেও জানাতে পারেন - কিন্তু বার বার এভাবে সোসাল মিডিয়াকে বিশ্রীভাবে ব্যাবহার করা কি যথেষ্ট কুরুচিকর নয় ?  ধর্ষণ কি আপনাদের ছেলেখেলা মনে হয় ? 

আপনাদের মতো লোকেরাই তো রোদ্দুর রায়কে অশ্লীল , অভদ্র বলেছেন । 
রোদ্দুর রায়ের সবথেকে বড়ো পরিচয় , এই সময় তিনি একজন বিচারাধীন বেক্তি । তার ব্যাপারে আমি একটিও শব্দ লিখবোনা । কিন্তু অশালীন ভাষা , কুরুচিকর শব্দ বা সামাজিক বোধ বলতে , আপনারা এই সুসভ্য , শিক্ষিত এবং বুদ্ধিজীবিরা ঠিক কি বোঝেন ? 


আসলে সবটাই তো লোক দেখিয়ে আখের গোছানো । আপনারা হেরোদলের লোক । আপনাদের শিল্প , সাহিত্য , সংগীত , লাইট , ক্যামেরা - সবকিছুকে পেছনে ফেলে একটা লোক জাস্ট কিছু ভুল ভাল কথা বলে , আপনাদের থেকে অনেক বেশী টাকা আর জনপ্রিয়তা পেয়ে গেছে । 

শুধু হিসাবের খাতিরে বলি , ওনার যে কোন একটা ভিডিওর যা দর্শক , আপনাদের সারাজীবনের কাজের অতো দর্শক হয়নি । 
আসলে কোলকাতার তথাকথিত শিল্পী , শিক্ষিত , বুদ্ধিজীবীদের লোকের কাছে রোদ্দুর রায়ের মুখের ভাষা কোন সমস্যাই নয় । মুল সমস্যা হলো " লোকটা শুধু গালাগালি দিয়েই এতো টাকা পাচ্ছে ? " । রোদ্দুর এর বদলে বৃষ্টি , তার বদলে জল - এলেও আপনাদের তাকে নিয়ে হাজার অভিযোগ থাকতো । কারন লোকটা টাকা ইনকাম করছে । 



রোদ্দুরের কথা ছাড়ুন - তিনি বিচারাধীন বেক্তি । কিন্তু আপনাদের যেসব গালভরা শব্দগুলো নিয়ে দিন কাটে - তার কতোটুকু নিজেদের জীবনে মানেন ? টাকা ছাড়া আর কিছু চেনেন আপনারা ? আপনাদের ধারনা একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শিল্প , সাহিত্য , সিনেমা , ছবি আঁকা - এইসব কিছু থেকে যা টাকা আসবে , তা কোন এক জাদুবলে আপনাদের মধ্যেই চলে আসবে আর আপনারা তথাকথিত বুদ্ধিজীবি হয়ে চ্যানেলে বসে লেকচার মারবেন । 
সেটা যখন হয়না -তখন কেকে-র মতো গায়ককেও আপনারা তুলোধোনা করেন । কেকে কে যতো বাঙালী বুদ্ধিজীবীদের মতামতের পাহাড় - তার আসল তো সেই টাকা । পৃথিবীতে কোন সুসভ্য জাতির একজন শিল্পী অন্যের সাথে নিজের তুলনা করতে পেরেছেন এই বাংলার এই প্রজন্ম ছাড়া ? 

আর একজন শিল্পী তো তার স্বপক্ষে বলেই দিলেন , " এখান থেকে বোম্বের শিল্পীরা কতো টাকা নিয়ে যান আর তুলনামুলকভাবে তারা কতো কম পান " ! 
আপনাদের লজ্জ্বা হওয়া উচিত । আপনারা কি ভাবেন যে , " মানুষ না বুঝে টাকা খরচ করেন ? " 
আসলে আপনার থেকে কে কে অনেক বেশী যোগ্য - তাই তার টাকার পরিমান বেশী । আপনারা কি ভাবছেন আপনারাই জানেন । তবে বাংলাদেশের নোবেল এসে এখানে শো করলে আপনাদের সমস্যা হয়না । যদিও সে টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে , কিন্তু আপনাদের তখন কথা ফোটেনা - কারন নোবেলের পাওয়া টাকা আর কেকে র পাওয়া টাকার অংক তো এক নয় । 
অন্যকে বেশী পেতে দেখলে আপনাদের বিরক্তি , ঘৃণা , ক্ষোভ গুলো বেরিয়ে আসে আর নিজেদের ঢাক নিজেরাই পেটাতে থাকেন । 
আপনারা শিল্পী ? 
আসলে আপনারা জানেন , নিজের কাজ না থাকলেও কিভাবে অন্যকে ব্যাবহার করে দু-পয়সা কামিয়ে নিতে হয় । 
তাই আপনাদের মতো কিছু লোকের কাছে রোদ্দুরের ভাষায় প্রবলেম আবার কেকের গানেও প্রবলেম । কারন ওরা তো বিনা চাটুকারিতায় টাকা আয় করছেন । 

                                                      
                                            PROLAYSANKARDEYSVO